Ads

সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

নামাজের ফরজ ও ওয়াজিব কয়টি ও কি কি?

 নামাজের ফরজ ও ওয়াজিব কয়টি ও কি কি?

নামাজের ফরজ ও ওয়াজিব কয়টি ও কি কি?
নামাজের ফরজ ও ওয়াজিব কয়টি ও কি কি?

নামাজ ইসলামের অন্যতম প্রধান ইবাদত। এটি মুসলমানদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় বিধান, যা আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের ওপর ফরজ করেছেন। একজন মুসলমানের নামাজ শুদ্ধভাবে আদায় করার জন্য ফরজ ও ওয়াজিব সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ব্লগে আমরা আলোচনা করব নামাজের ফরজ ও ওয়াজিব সম্পর্কে বিস্তারিত।

নামাজের ফরজ কতটি ও কি কি?

নামাজের ফরজ দুই প্রকারঃ ১. শর্তীয় ফরজ – যা নামাজ শুরুর পূর্বে পালন করতে হয়। ২. কার্যগত ফরজ – যা নামাজের মধ্যে পালন করতে হয়।

নামাজের শর্তীয় ফরজ (৬টি)

নামাজ শুরু করার পূর্বে কিছু শর্ত পালন করতে হয়, যা নামাজের ফরজ বলে গণ্য করা হয়। সেগুলো হলো:

১. পাক-পবিত্রতা: ওজু বা গোসলের মাধ্যমে নিজেকে পবিত্র রাখা। ২. শরীর, কাপড় ও স্থান পবিত্র রাখা: যেখানে নামাজ পড়া হবে, তা নাপাক হওয়া চলবে না। ৩. সতর ঢেকে রাখা: পুরুষদের জন্য নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত এবং মহিলাদের জন্য সম্পূর্ণ শরীর (মুখমণ্ডল, হাত ও পায়ের পাতা ব্যতীত) আবৃত রাখা আবশ্যক। ৪. কিবলামুখী হওয়া: নামাজ পড়ার সময় কিবলার দিকে মুখ করা ফরজ। 5. নামাজের সময় হওয়া: নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী প্রতিটি নামাজ আদায় করা। 6. নিয়ত করা: মনে মনে নামাজের নিয়ত করা জরুরি।

নামাজের কার্যগত ফরজ (৭টি)

নামাজের মধ্যে যে কাজগুলো ফরজ, তা ছাড়া নামাজ শুদ্ধ হয় না। সেগুলো হলো:

১. তাকবীরে তাহরিমা বলা: নামাজ শুরু করার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলা। ২. কিয়াম করা: দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া (যদি শারীরিক সামর্থ্য থাকে)। ৩. কিরাত পড়া: নামাজে কুরআনের কিছু অংশ তিলাওয়াত করা। ৪. রুকু করা: নির্দিষ্টভাবে ঝুঁকে রুকু করা। ৫. সুজুদ করা: দুই হাত, দুই হাঁটু, নাক ও কপাল মাটিতে রেখে সিজদা করা। ৬. কাআদাহ আখিরা (শেষ বৈঠক): শেষ বৈঠকে বসা। ৭. নামাজ থেকে সালাম ফিরানো: ডান এবং বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করা।

নামাজের ওয়াজিব কতটি ও কি কি?

নামাজের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিধান রয়েছে, যা ফরজ নয়, তবে ওয়াজিব। এগুলো ভুলবশত ছুটে গেলে ‘সিজদাহ সাহু’ দিতে হয়। সেগুলো হলো:

১. সূরা ফাতিহা পড়া: প্রতিটি রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়া। ২. ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলানো: প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার পর অন্য কোনো সূরা বা আয়াত পড়া। ৩. তাসবিহ বলা: রুকু ও সিজদায় তিনবার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম’ ও ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা’ বলা। ৪. প্রথম কায়দা: দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাজে ও চার রাকাত নামাজের দ্বিতীয় রাকাতের পর বসা। ৫. তাশাহহুদ পড়া: কায়দায় বসে ‘আত্তাহিয়াতু লিল্লাহি’ পড়া। ৬. তাসবিহ ও দোয়া: নামাজের মধ্যে বিশেষ তাসবিহ ও দোয়া পড়া। ৭. তাকবির বলা: বিভিন্ন অবস্থায় ‘আল্লাহু আকবার’ বলা। ৮. সালাম ফিরানো: নামাজ শেষ করার জন্য ডান ও বামে সালাম ফেরানো।

নামাজের ফরজ ও ওয়াজিব পালন না করলে কী হয়?

  • যদি ফরজ কোনো কাজ ছুটে যায়, তবে সেই নামাজ বাতিল হয়ে যায় এবং তা পুনরায় পড়তে হবে।
  • যদি ওয়াজিব কোনো কাজ ভুলে ছুটে যায়, তবে ‘সিজদাহ সাহু’ দিতে হয়। যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়াজিব ছেড়ে দেওয়া হয়, তবে নামাজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

উপসংহার

নামাজের ফরজ ও ওয়াজিব সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা একজন মুসলমানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, নামাজ ইসলামের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ, যা সঠিকভাবে আদায় করতে হলে এর সকল ফরজ ও ওয়াজিব পালন করতে হবে। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত, নিয়ম অনুযায়ী নামাজ আদায় করা এবং ভুল সংশোধন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Top Ad

Pages

SoraTemplates

Best Free and Premium Blogger Templates Provider.

Buy This Template