জান্নাতের পথিক
তাহমিনা চোখ খুলে দেখল, সে এক অচেনা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। চারপাশে অপার্থিব আলো, সুবাসিত বাতাস, আর এক অদ্ভুত প্রশান্তি। তার মনে হল, সে যেন কোনো স্বপ্নরাজ্যে প্রবেশ করেছে।
তার মনে পড়ল, এই তো সে একটু আগেও হাসপাতালের শীতল বিছানায় ছিল, তার পরিবারের সবাই তাকে ঘিরে কাঁদছিল। অথচ এখন সে এখানে কিভাবে এল?
হঠাৎই তার সামনে একজন অপরূপ সৌন্দর্যের মানুষ দাঁড়িয়ে গেল। তার পরনে ঝলমলে সাদা পোশাক, মুখে প্রশান্তির হাসি। তিনি বললেন, "তাহমিনা, স্বাগতম। তুমি জান্নাতে প্রবেশ করেছো।"
তাহমিনার হৃদয় ধক করে উঠল। সে অবাক বিস্ময়ে চারপাশে তাকালো। স্বচ্ছ পানির নদী, সোনার সেতু, মুক্তার প্রাসাদ আর এমন এক সৌন্দর্য যা সে কখনো কল্পনাও করেনি। পাখিরা গান গাইছে, বাতাসে সুগন্ধি মিশে আছে। মনে হচ্ছে, এখানে কোনো কষ্ট নেই, শুধু শান্তি আর আনন্দ।
সে দ্বিধাভরে বলল, "আমি কি সত্যিই জান্নাতে? আমি তো পাপী ছিলাম!"
সেই রহস্যময় ব্যক্তি মৃদু হেসে বললেন, "তুমি দয়ালু ছিলে, তুমি মানুষের উপকার করেছিলে, তোমার হৃদয় ভালোবাসায় পূর্ণ ছিল। তোমার দয়ালু মনই তোমাকে এই পথে নিয়ে এসেছে।"
তাহমিনার চোখে জল চলে এল। সে ভাবল, কতবার সে নিজেকে তুচ্ছ ভেবেছে, নিজের ভুল নিয়ে হতাশ হয়েছে। অথচ এই ভালোবাসা আর দয়ার গুণেই সে আজ এখানে!
হঠাৎই সে দেখল, সামনে একটি সুবিশাল দরজা, যার ওপার থেকে অপার আনন্দের শব্দ ভেসে আসছে। সে জানতে চাইল, "এই দরজার ওপারে কী আছে?"
ব্যক্তিটি বললেন, "এখানে তোমার অপেক্ষায় আছে তারা, যাদের তুমি ভালোবেসেছিলে, যাদের জন্য তুমি কেঁদেছিলে। এখানে শুধু ভালোবাসা, আনন্দ আর প্রশান্তি আছে। চল, তুমি তোমার প্রাপ্য স্বর্গের সুখ উপভোগ করো।"
তাহমিনা ধীরে ধীরে দরজার দিকে পা বাড়াল। দরজা খুলতেই এক উজ্জ্বল আলো তার চারপাশ আলোকিত করে দিল। সে বুঝতে পারল, সত্যিকারের শান্তি ও আনন্দ কেমন হয়।
তার যাত্রা শেষ হলো না, বরং নতুন এক শুরু হলো—এক চিরস্থায়ী সুখের শুরু।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন